শেষবার প্রিয় মেরুন জার্সি গায়ে মাঠে নামলেন আন্দ্রে রাসেল। শেষ দিনেও বাইশগজে ঝড় তুললেন ব্যাট হাতে। ম্যাচ হারলেও জন্মশহর কিংস্টনের স্যাবাইনা পার্ক পেলেন বিশেষ সম্মান। ম্যাচ শেষে বললেন, এখনই থেমে যাওয়ার সময়। বিদায়লগ্নে দর্শক, পরিবার ও বন্ধুদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানালেন দ্রে রাস।
মুম্বাইয়ে ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের কথা হয়ত মনে আছে ক্রিকেট ভক্তদের। ভারতের বিপক্ষে ২০ বলে ৪৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে দলকে ফাইনালে তুলেছিলেন রাসেল। ওয়ান ম্যান আর্মি হয়ে এমন অনেকবারই জিতিয়েছেন দলকে। এরপর সময়ের স্রোতে গায়ে লেগেছে টি-টোয়েন্টির ফেরিওয়ালা তকমা। তাইতো প্রিয় মেরুন জার্সি গায়ে উঠতো অনিয়মিত। শেষবার জাতীয় দলের সেই জার্সি গায়ে জন্মশহর কিংস্টনের স্যাবাইনা পার্কে নামলেন আন্দ্রে ডোয়াইন রাসেল।
সতীর্থ থেকে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড় কিংবা জ্যামাইকার দর্শক, সবার অভিবাদনে মুখরিত রূপ ধারণ করলো স্যাবাইনা পার্ক। নজর কাড়লো কাপড়ে ঢাকা উপহারটাও। ব্যাট বলের মিশেলে বানানো এক বিশেষ গিটার। যা মনে করিয়ে দিলো দ্রে রাস কোনো সাধারণ ক্রিকেটার নন। দ্যা রকস্টার অফ ক্যারিবিয়ান ক্রিকেট।
বিদায়ী ম্যাচে ব্যাট হাতে শেষ দিনটাও মাতালেন রাসেল। এদিন ৪ ছক্কা আর দুই চারে খেলেছেন ১৫ বলে ৩৬ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। যদিও আগ্রাসী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয় দিয়ে রাসেলের বিদায়টা রাঙাতে পারেনি উইন্ডিজ। তবে জয় পরাজয় পেরিয়ে ম্যাচ শেষে ভিন্ন এক আবেগ ছুঁয়ে গেলো আন্দ্রে রাসেলকে।
ম্যাচ শেষে আন্দ্রে রাসেল বলেন, ম্যাচের ফল আমাদের পক্ষে আসেনি। কিন্তু এটাই ক্রিকেট। দিন শেষে আমি খুশি। স্যাবাইনা পার্কে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শেষ করতে পেরেছি। স্থানীয় দর্শক, পরিবার ও বন্ধুদের সামনে খেলেছি। এই সুযোগ করে দেয়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডকে ধন্যবাদ। আপনাদের সমর্থন পেয়ে আমি কৃতজ্ঞ।
এদিকে উইন্ডিজ ক্রিকেটে কাটছে না দুঃসময়। হারের বৃত্তে আবদ্ধ ক্যারিবিয়ানরা। এদিকে ৭ মাস পরই আরেকটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। সেখানে রাসেলের অভিজ্ঞতা নিশ্চয়ই এগিয়ে রাখতো দলকে। তবুও কেন বিশ্বকাপের আগেই এই অবসর, রাসেল দিলেন সেই ব্যাখ্যাও।
রাসেল বলেন, আমার মনে হয়েছে এখনই থেমে যাওয়ার সময় এসেছে। দলে কয়েকজন ভালো খেলোয়াড় আছে। শেফার্ড বেশ আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলছে। রাদারফোর্ড, আলজারি এবং হোল্ডারের মতো খেলোয়াড়ও দলে আছে। এখান থেকেই ছেলেরা দলকে এগিয়ে নেবে।
২০১০ সালে গল টেস্ট দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শুরু রাসেলের। ক্যারিয়ারে খেলেছেন ঐ একটিমাত্র টেস্টই। ওয়ানডে খেলেছেন ৫৬টি, যার শেষটি বাংলাদেশের বিপক্ষে ২০১৯ বিশ্বকাপে। তবে বিশ্ব ক্রিকেট রাসেলকে মনে রাখবে চার ছক্কার টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের জন্যই।