ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠনের বিরুদ্ধে গাজায় ইসরায়েলকে ‘অপারেশন শেষ করতে’ বললেন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করেছিলেন যে গাজায় যুদ্ধবিরতি, জিম্মিদের মুক্তি এবং দুর্ভিক্ষপীড়িত গাজায় সাহায্য পৌঁছানোর চুক্তি কয়েক দিনের মধ্যেই সম্পন্ন হবে।
কিন্তু এখন ট্রাম্পের সেই আশাবাদ যেন উঠে গেছে। হামাস ‘সমন্বিত’ বা ‘সদিচ্ছাপূর্ণ’ আচরণ করছে না—এমন যুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র এই সপ্তাহে যুদ্ধবিরতি আলোচনা থেকে তাদের আলোচকদের সরিয়ে নেয়।
ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফ বলেছেন, তিনি এখন জিম্মিদের মুক্ত করার জন্য ‘বিকল্প উপায়’ খুঁজছেন।
আলোচনা টেবিলে ফিরতে উৎসাহিত করার বদলে, ট্রাম্প স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৬ জুলাই) ইসরায়েলকে সামরিক অভিযান তীব্র করার ইঙ্গিত দিয়েছেন—এমনকি গাজায় ক্ষুধার্ত শিশুদের ছবি বিশ্বজুড়ে ক্রমবর্ধমান ক্ষোভ সৃষ্টি করলেও।
স্কটল্যান্ডের উদ্দেশে রওনা দেয়ার আগে ট্রাম্প হামাস সম্পর্কে বলেন, ‘আমার মনে হয় তারা মরতে চায়, এবং এটা খুবই খারাপ অবস্থা। একটা সময় আসে যখন আপনাকে এই কাজ শেষ করতেই হয়।’
ট্রাম্পের এই অবস্থান পরিবর্তন কি আলোচনা ভেঙে যাওয়ার প্রতিফলন, নাকি—কিছু পশ্চিমা কর্মকর্তার মতে—হামাসকে চাপে ফেলে অচলাবস্থা কাটানোর কৌশল, তা স্পষ্ট নয়।
তবে তার বক্তব্য থেকে স্পষ্ট, গাজায় ইসরায়েলের ২১ মাসের সামরিক অভিযান থামাতে তিনি তেমন চাপ দেবেন না—এমনকি জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তা এই সপ্তাহে গাজাবাসীকে ‘হাঁটতে থাকা লাশ’ বলে বর্ণনা করলেও।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সম্প্রতিক আলোচনা সম্পর্কে ট্রাম্প শুধু এতটুকু বলেছেন যে তা ‘হতাশাজনক’ ছিল। গাজা ও সিরিয়ায় নেতানিয়াহুর সাম্প্রতিক পদক্ষেপ তাকে বিস্মিত ও বিরক্ত করেছে।
‘ইসরায়েলকে লড়াই করতেই হবে এবং তাদের পরিষ্কার করতেই হবে। আপনাকে তাদের (হামাস) নির্মূল করতেই হবে,’ ট্রাম্প বলেছেন।
এটি ছিল ট্রাম্পের একটি কঠোর স্বীকারোক্তি যে, এই মাসের শুরুতে চূড়ান্ত পর্যায়ে থাকা যুদ্ধবিরতি আলোচনা এখন পথভ্রষ্ট হয়েছে। গাজায় যুদ্ধ থামাতে ব্যর্থতা এবং ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ বন্ধ করতে তার সংগ্রাম—এগুলো নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য জোরালো প্রচেষ্টার মধ্যেও ট্রাম্পকে হতাশ করছে।
তবে তার এই হতাশা মধ্যপ্রাচ্যর অন্যান্য সংকেতের সঙ্গে পুরোপুরি মেলে না। মিশর ও কাতার যৌথ বিবৃতিতে বলেছে যে তারা গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতির জন্য মধ্যস্থতা চালিয়ে যাবে এবং আলোচনা সাময়িক স্থগিতকে ‘জটিল আলোচনার প্রেক্ষিতে স্বাভাবিক’ বলে উল্লেখ করেছে।
একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেছেন যে আলোচনা ‘একদমই’ ভেঙে পড়েনি এবং আলোচনা পুনরায় শুরু করার সুযোগ এখনও আছে।
কিছু মার্কিন কর্মকর্তা আশা করছেন, ট্রাম্পের শুক্রবারের (২৬ জুলাই) মন্তব্য এবং উইটকফের আলোচনা থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত হামাসকে আপোসমূলক অবস্থানে নিয়ে আসতে পারে।