অরক্ষিত খাল-নালায় ৬ বছরে ১৪ মৃত্যু, প্রশাসনের নীরবতা প্রশ্নবিদ্ধ

চট্টগ্রামে অরক্ষিত খাল-নালায় মৃত্যু বাড়ছে, নেই তদন্ত, নেই দায় স্বীকার

চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন স্থানে এখনো অরক্ষিত খাল-নালা রয়ে গেছে, যার ফলে বারবার ঘটছে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা। গত ৬ বছরে এসব অরক্ষিত খাল-নালায় পড়ে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১৪ জনের। এর মধ্যে ৬ জনই শিশু। কিন্তু এতগুলো প্রাণহানির পরও কোনো ঘটনার তদন্তে কমিটি গঠন করেনি সংশ্লিষ্ট দুটি সংস্থা—চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)।

 

প্রতিবারই মৃত্যুর দায় একে অন্যের উপর চাপিয়ে দিয়েছে প্রতিষ্ঠান দুটি। ফলে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা থেকে গেছেন আড়ালে। সবচেয়ে হতাশাজনক হলো, এমন দুঃখজনক মৃত্যুর পরও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।

 

সাম্প্রতিক এক ঘটনায়, গত শুক্রবার রাতে নগরের হিজড়া খালে পড়ে ছয় মাস বয়সী শিশু সেহরিশের মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটে। শিশুটির মা ও দাদি বেঁচে গেলেও শিশুটিকে উদ্ধার করতে সময় লেগেছে ১৪ ঘণ্টা। এর আগে ২০২১ সালে চশমা খালে এবং আগ্রাবাদের নালায় পড়ে আরও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।

 

দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা দুটির কর্মকর্তারা স্বীকার করেন, এসব ঘটনায় তদন্ত কমিটি হওয়া উচিত ছিল। তবে কেন হয়নি, সে দায় কেউ নিতে রাজি নয়। নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পরিবর্তে বারবার অব্যবস্থাপনা ও দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।

 

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চট্টগ্রামের সম্পাদক আখতার কবির চৌধুরী বলেছেন, “এখনো মানুষ খালে-নালায় পড়ে মারা যাচ্ছে—এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। কিন্তু এই মৃত্যুর পেছনে কার গাফিলতি আছে, তা খুঁজে বের করতে চসিক বা সিডিএ কোনোদিন তদন্ত কমিটি গঠন করবে না, কারণ মানুষের জীবনের তাদের কাছে মূল্য নেই।”

 

এমন মৃত্যুর ঘটনা যাতে আর না ঘটে, তার জন্য চাই দ্রুত ও স্বচ্ছ তদন্ত, জবাবদিহিতা এবং অরক্ষিত খাল-নালাগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।