
সংবাদ প্রতিবেদন:
আজ ১লা মে, বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে ‘মে দিবস’ বা আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার, মর্যাদা এবং ন্যায্য মজুরির দাবিতে আজ থেকে প্রায় ১৩৯ বছর আগে শুরু হওয়া এই আন্দোলন এখনো সমান প্রাসঙ্গিক। বাংলাদেশসহ বিশ্বের নানা প্রান্তে দিবসটি উদযাপন করা হচ্ছে নানা কর্মসূচির মাধ্যমে।

১লা মে মে দিবসে ঢাকায় শ্রমিকদের র্যালি – শ্রমিকের ন্যায্য মজুরি ও অধিকার নিশ্চিতের দাবি
মে দিবসের সূচনা ১৮৮৬ সালের ১ মে, যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে হেইমার্কেটের শ্রমিকদের রক্তাক্ত আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। তারা দৈনিক ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে রাজপথে নেমেছিলেন। সেই আন্দোলনের ফলেই আজ শ্রমিকদের অধিকার ও কর্মঘণ্টা নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে নানা নীতিমালা তৈরি হয়েছে।
বাংলাদেশে মে দিবসের তাৎপর্য
বাংলাদেশে মে দিবস পালিত হয় জাতীয় ছুটি হিসেবে। সরকারিভাবে এবং বেসরকারিভাবে নানা সংগঠন র্যালি, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিনটি পালন করে থাকে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহীসহ বিভিন্ন শহরে শ্রমিক সংগঠনগুলো আজ রাস্তায় নামছে তাদের বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে।
এ বছরের মে দিবসে শ্রমিক সংগঠনগুলো বিশেষভাবে জোর দিচ্ছে ন্যায্য মজুরি, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা, শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষা এবং নিয়মিত চাকরির নিশ্চয়তা নিয়ে। গার্মেন্টস, নির্মাণ, পরিবহনসহ বিভিন্ন খাতে কাজ করা শ্রমিকরা এখনো নানা দুর্বিষহ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন।
প্রযুক্তির যুগে শ্রমিক আন্দোলনের নতুন ধারা
বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তির যুগে শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া আদায়ের কৌশলেও পরিবর্তন এসেছে। এখন অনলাইনে ক্যাম্পেইন, ভার্চুয়াল আলোচনা এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে দ্রুত দাবি পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে। তবে অনেক ক্ষেত্রেই এখনো দেখা যায়, শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, বিশেষ করে অনানুষ্ঠানিক খাতে।
রাষ্ট্রের ভূমিকা ও ভবিষ্যৎ ভাবনা
শ্রমিকদের উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি মালিকপক্ষ এবং সাধারণ জনগণেরও দায়িত্ব রয়েছে। সবাই মিলে শ্রমজীবী মানুষের প্রতি সম্মান দেখাতে হবে, নিশ্চিত করতে হবে তাদের মৌলিক অধিকার। উন্নত ও মানবিক বাংলাদেশ গড়তে হলে শ্রমিকদের অবদানকে যথাযথভাবে মূল্যায়ন করতেই হবে।
মে দিবস কেবল একটি আনুষ্ঠানিক দিবস নয়; এটি একটি চেতনার নাম, সংগ্রামের প্রতীক। শ্রমিকদের প্রতি সম্মান জানানো এবং তাদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করা আজকের দিনের মূল বার্তা হওয়া উচিত। সবার সম্মিলিত চেষ্টায় গড়ে উঠুক একটি সমতাভিত্তিক, ন্যায়বান ও মানবিক সমাজ।