
বাংলাদেশে শিক্ষার অবকাঠামো উন্নয়নের অনেক প্রচেষ্টা হচ্ছে — নতুন পাঠ্যক্রম, ডিজিটাল ক্লাস, প্রযুক্তির সংযোগ, শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইত্যাদি। তবে এতসব পরিবর্তনের পরেও একটি প্রশ্ন থেকেই যায়: আমরা কী আদৌ মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে পারছি? উত্তরটা যদি সততার সাথে দিই, তাহলে বলতে হয় — না। কেননা সমস্যা শিক্ষার পদ্ধতিতে নয়, আমাদের সামগ্রিক মনোভাবে।
আমাদের শিক্ষা এখনো মুখস্থনির্ভর, পরীক্ষাকেন্দ্রিক, ও ফলাফলবাজ। শিক্ষার্থীর সৃজনশীলতা, বিশ্লেষণ ক্ষমতা কিংবা নৈতিকতা গঠনের জায়গা অনেকটাই অনুপস্থিত। শিক্ষকরা ক্লাসে শুধু পাঠ্যবইয়ের পাঠ শেষ করলেই দায়িত্ব শেষ মনে করেন। অন্যদিকে, অভিভাবকরা সন্তান A+ না পেলে হতাশ হয়ে পড়েন — তারা শেখার আনন্দ নয়, শুধুই ফলাফল দেখতে চান।
এই সংস্কৃতি শিক্ষার্থীদের মনে ভয়, চাপ ও বিষণ্নতা তৈরি করে। তাদের শেখা হয় পরীক্ষার জন্য, জীবনের জন্য নয়। অথচ সঠিক শিক্ষা তো জীবনের প্রস্তুতি হওয়া উচিত — যেখানে একজন শিশু মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠে, চিন্তা করতে শেখে, প্রশ্ন করতে শেখে।
আমরা যদি সত্যিকারের শিক্ষাব্যবস্থা গড়তে চাই, তবে আগে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গির সংস্কার দরকার। শিক্ষা শুধু ডিগ্রি নয় — এটা মানসিক, নৈতিক ও সামাজিক বিকাশের পথ। দৃষ্টিভঙ্গির এই পরিবর্তনই আমাদের ভবিষ্যৎ গড়বে।