সেপ্টেম্বরে রোহিঙ্গা তহবিল সংকটের শঙ্কা, কাতারের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে কাতারকে সহযোগিতার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দোহায় অনুষ্ঠিত আর্থনা সামিটে এক গোলটেবিল বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি জানান, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) সাময়িকভাবে রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে, তবে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরেই আবার তহবিল সংকট দেখা দিতে পারে। এই পরিস্থিতিতে তিনি কাতারকে সহায়তার জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

তিনি আরও জানান, আগামী সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের পৃষ্ঠপোষকতায় একটি উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে কাতারের সহায়তাও প্রত্যাশিত।

প্রফেসর ইউনূস রাখাইন রাজ্যে সাম্প্রতিক অস্থিরতা এবং আরাকান আর্মির তৎপরতার উল্লেখ করে বলেন, পরিস্থিতিতে নাটকীয় পরিবর্তন এসেছে। এই সংকটের দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই সমাধানের লক্ষ্যে তিনি আটটি সুপারিশ তুলে ধরেন:

১. মানবিক অর্থায়ন নিশ্চিত রাখা: খাদ্য, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, আশ্রয় ও নিরাপত্তার জন্য স্থায়ী অর্থায়নের প্রয়োজন।
২. জীবিকা সহায়তা: ক্যাম্পের দক্ষ ও শিক্ষিত রোহিঙ্গাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে হবে।
৩. ভাসানচর উন্নয়নে সহায়তা: স্বাস্থ্য, শিক্ষা, যোগাযোগ ও পানীয়জলের সুবিধা উন্নয়নে কাতারের ভূমিকা চাওয়া হয়েছে।
৪. শিক্ষা সহায়তা: শিশু ও কিশোরীদের জন্য বাংলা, ইংরেজি ও বার্মিজ ভাষাভিত্তিক শিক্ষা চালু করা উচিত।
৫. পরিবেশ সুরক্ষা: বৃক্ষরোপণ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।
৬. অবকাঠামোগত উন্নয়ন: কক্সবাজার ও ভাসানচরে রাস্তাঘাট ও অন্যান্য অবকাঠামো উন্নয়নে সাহায্য প্রয়োজন।
৭. আন্তর্জাতিক সংলাপ ও কূটনৈতিক সহায়তা: নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসনের জন্য বিশ্বজুড়ে কূটনৈতিক তৎপরতা দরকার।
৮. রোহিঙ্গা নেতৃত্বের সম্পৃক্ততা: যে কোনো উদ্যোগে রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা জরুরি।

এই সুপারিশগুলোর লক্ষ্য রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধান ও মানবিক সহায়তার পথ সুগম করা।