
শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ: কর্মক্ষেত্রে তুই-তুমি নয়, মর্যাদাসম্পন্ন ভাষা ব্যবহারের আহ্বান
শ্রমপরিবেশে মর্যাদার সংস্কৃতি গড়ে তোলার লক্ষ্যে কর্মক্ষেত্রে শ্রেণি, লিঙ্গ, বর্ণ বা জাতিভেদে অবমাননাকর ভাষা পরিহার এবং মর্যাদাসম্পন্ন ভাষা ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে শ্রম সংস্কার কমিশন।
সোমবার (২১ এপ্রিল) কমিশন তাদের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেয়। এতে বলা হয়েছে, অফিস-কারখানায় তুই-তুমি করে সম্বোধন নয়, বরং সম্মানসূচক ভাষা ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি শ্রম আইনে ‘মহিলা’ শব্দের পরিবর্তে ‘নারী’ শব্দ ব্যবহারের সুপারিশ করা হয়েছে।
কমিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নারী, পুরুষ ও অন্যান্য লিঙ্গের শ্রমিকদের সমান অধিকার নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নিতে হবে রাষ্ট্রকে। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীসহ সব শ্রমিকের কর্মসংস্থান ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশও করা হয়েছে।
যৌন হয়রানি প্রতিরোধে ২০০৯ সালের হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুসারে, সব প্রতিষ্ঠানে হয়রানিবিরোধী নীতিমালা প্রণয়ন, অভিযোগ সেল ও নিষ্পত্তি কমিটি গঠনের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
মাতৃত্বকালীন সুরক্ষায়, নারী শ্রমিকদের জন্য ছয় মাসের পূর্ণবেতন ছুটি নিশ্চিত করতে সরকার ও প্রতিষ্ঠানের যৌথ সহযোগিতার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বিশেষ স্কিমের মাধ্যমে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের নারীদেরও এ সুবিধার আওতায় আনার কথা বলা হয়েছে।
শিশু ও জবরদস্তিমূলক শ্রম বন্ধেও জোরালো ব্যবস্থা নিতে বলেছে কমিশন। আগাম দাদন দেওয়াসহ সব ধরনের জোরপূর্বক শ্রমের চর্চা রোধে কার্যকর নীতি গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সব শ্রমিকের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক মানের (ILO) জীবনচক্রভিত্তিক কর্মসূচি চালুর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যার আওতায় দুর্ঘটনা, অসুস্থতা, মাতৃত্ব বা অবসরকালীন সময়ে সুরক্ষা নিশ্চিত হবে।
শেষে, শ্রম আদালত থেকে শুরু করে আপিল বিভাগ পর্যন্ত সর্বত্র বাংলা ভাষার ব্যবহার চালু করার আহ্বান জানিয়েছে কমিশন।