পর্তুগাল: উন্নয়নের চিন্তা ভুলে সংসদ ব্যস্ত শুধু অভিবাসন নীতিতে
পর্তুগাল বর্তমানে এক অদ্ভুত রাজনৈতিক বাস্তবতার মধ্যে আছে — দেশের সংসদ প্রায়শই শুধুমাত্র অভিবাসন নিয়ে তর্কে ব্যস্ত। আর এই সময়েই দেশের প্রকৃত উন্নয়নমূলক চ্যালেঞ্জগুলো অনিহিতভাবে পিছিয়ে পড়ছে।
সংসদের ফোকাস: অভিবাসী নিয়ন্ত্রণ
গত কয়েক মাস ধরে সংসদের প্রধান আলোচ্য বিষয় হয়েছে নতুন অভিবাসন নীতি ও সীমান্ত ব্যাবস্থাপনা। সরকার ও বিরোধীদল একে অন্যের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে — কেউ মানবিক দিককে জোর দেয়, তো কেউ অভিবাসনের প্রতিকূল প্রভাব সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করে। এই বিতর্কে সংসদের সময়ের বড় অংশ নষ্ট হওয়ায় দেশের ভেতরের সমস্যা সমাধানের কাজ পিছিয়ে পড়ছে।
দেশের বড় সমস্যা গুলো
- বাড়িভাড়া ও আবাসন সংকট: লিসবন ও পোর্তোর মতো শহরে বাড়ির ভাড়া অত্যন্ত বেড়ে গেছে; সাধারণ মানুষের জন্য বাসস্থান বিরল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
- বেকারত্ব ও নিম্ন মজুরি: তরুণ প্রজন্মের মধ্যে নির্ধারিত ও আকর্ষণীয় চাকরির অভাব রয়েছে; অনেকে কর্মসূত্রের খোঁজে বাইরে চলে যাচ্ছেন।
- স্বাস্থ্যখাতে সমস্যা: সরকারি হাসপাতালগুলোতে দীর্ঘ অপেক্ষা, চিকিৎসকের ঘাটতি ও বাজেটের সীমাবদ্ধতা দেখা যায়।
- শিক্ষা ও গবেষণার ঘাটতি: উচ্চশিক্ষায় পর্যাপ্ত বিনিয়োগ না থাকায় মেধাবী ছাত্র বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে ঝুঁকছে।
- রাজনৈতিক বিভাজন: দলীয় সংঘাত ও অনিশ্চয়তার কারণে নীতিগত স্থিতিশীলতা দুর্বল হচ্ছে এবং দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনা আটকে যাচ্ছে।
জনমত ও বিশ্লেষক পর্যবেক্ষণ
অধিকাংশ নাগরিক মনে করেন, অভিবাসন একটি গুরুতর বিষয় হলেও সেটি সংসদের একমাত্র আলোচ্য হওয়া উচিত নয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, পর্তুগালের জন্য এখন ভারসাম্যপূর্ণ নীতি দরকার — যেখানে অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ ও মানবিক দিকের পাশাপাশি অর্থনীতি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে বিনিয়োগ বাড়ানো হবে।
মন্তব্য
অভিবাসন নীতি গুরুত্বপূর্ণ হলেও দেশ যদি তার ভিতরের অর্থনৈতিক ও সামাজিক চ্যালেঞ্জগুলো উপেক্ষা করে, তাহলে দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের সুযোগ হারাবে। পর্তুগালের এখন মূল চাহিদা হল এমন নেতৃত্ব যারা অভিবাসন ও উন্নয়ন—দুটোকেই সমান গুরুত্ব দিবে এবং বাস্তব কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করবে।



